যুব দর্পণ প্রতিনিধি, ৫ মার্চ ,কলকাতা :: পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি জীবনানন্দ সভা ঘরে আজ কণ্ঠের যাদুকর সব্যসাচী পুরস্কারে ভূষিত হলেন ত্রিপুরার বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী শাওলী রায়।কবি তীর্থ চুরুলিয়া এর দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে আজ দেশ বিদেশের আট জন বিশিষ্ট বাচিক তথা আবৃত্তি শিল্পীকে কণ্ঠের জাদুকর সব্যসাচী পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে শাওলী রায় কে অঙ্গবস্ত্র,পুষ্পস্তবক, স্মারক ও মানপত্র প্রদান করেন দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন এর সম্পাদক সোনালী কাজী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখার্জী।অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন এর সম্পাদক ,কাজী নজরুল এর পরিবারের অন্যতম উত্তরসূরি সোনালী কাজী বলেন, যাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে নজরুল এর কবিতা আবৃত্তি চর্চার সঙ্গে যুক্ত , দেশ বিদেশের নজরুল প্রেমী আবৃত্তিশিল্পীদের প্রতি বছরই কাজী সব্যসাচী পুরস্কার প্রদান করা হয়।নজরুলের তৃতীয় পুত্র প্রখ্যাত আবৃত্তি শিল্পী ,কণ্ঠের যাদুকর কাজী সব্যসাচীর নামে এই পুরস্কার উৎসর্গ করেছে দোলনচাঁপা ফাউন্ডেশন। এই বছর অন্যান্যদের মধ্যে সব্যসাচী পুরস্কার পেয়েছেন কলকাতার বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী বৃন্দ যথাক্রমে দেবাশীষ বসু,অঞ্জল চট্টোপাধ্যায়,সত্যকাম বাগচী, রবীন মজুমদার,মালদা এর বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী সুশান্ত সাহা,বাংলাদেশের বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পীদ্বয় ড. শাহাদাত হোসেন নিপু এবং ফারহানা তৃনা। অনুষ্ঠানে দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন এর সভাপতি লিয়াকত হোসেন ও উপস্থিত ছিলেন। পুরষ্কার প্রদান এর পর পুরস্কার প্রাপকরা তাঁদের অনুভব ব্যক্ত করেন।
কলকাতার বহু বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন।প্রসঙ্গত ,ত্রিপুরার বিশিষ্ট বাচিক তথা আবৃত্তিশিল্পী শাওলী রায় এর সব্যসাচী পুরস্কার প্রাপ্তিতে রাজ্যের সংস্কৃতি মহলে খুশির ছোঁয়া ।সমাজের অন্যায়,জাতি বিদ্বেষ,নারী পুরুষের বৈষম্য,সমাজের নানা চিত্র ,সেই সঙ্গে প্রেম ও বিরহের নানা অনুভব কে কবিতার মধ্য দিয়ে রূপকল্প আঁকতে সচেষ্ট ত্রিপুরার এই সময়ের জনপ্রিয় আবৃত্তি শিল্পী তথা বাচিক শিল্পী শাওলী রায়।কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে এবং গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী অর্জন। এছাড়া ভরতনাট্যমে বিশারদ ডিগ্রী ও ভরতনাট্যমে সি সি আর টির স্কলারশিপ পেয়েছেন।সমলয়ে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ও রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চাতে নিজেকে ব্যাপৃত রাখলেও আবৃত্তি ও শ্রুতি শিল্পের চর্চার সঙ্গেই নিজেকে বেশিরভাগ জড়িয়ে রেখেছেন।তিনি আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের গ্রন্থাগারিক এ কর্মরত ছিলেন।বর্তমানে আগরতলা গভর্নমেন্ট নার্সিং কলেজ এবং আগরতলা গভর্নমেন্ট ডেন্টাল কলেজের গ্রন্থাগারিক এর পদে আসীন রয়েছেন।ত্রিপুরা দূরদর্শন এর নিয়মিত উপস্থাপিকা হিসেবে একজন জননন্দিত শিল্পী শাওলী রায়। ত্রিপুরা তথা উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ,বাংলাদেশে বহু অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করে প্রশংসিত ও সম্বর্ধিত হয়েছেন বহুবার।আবৃত্তি ও শ্রুতি শিল্পে অনন্য অর্জন হিসেবে কলকাতার সর্ব ভারতীয় পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা সুর নন্দন ভারতীর সাম্মানিক আবৃত্তি নন্দন সম্মাননা, কলকাতায় পেয়েছেন প্রসাদ পুরস্কার, বিশ্ব বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের সম্মাননা,আগরতলা তে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে স্বর্ন কমল জুয়েলার্সের স্বর্ণশ্রী সম্মাননা , ভি নিউজ এর মহীয়সী সম্মাননা,নিউজ টাইমস টোয়েন্টি ফোর এর যশস্বীনি সম্মান সহ কলকাতা , ত্রিপুরা,বরাক উপত্যকা,বাংলাদেশে বহুবার বহু অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি শিল্পী হিসেবে অংশ নিয়ে দর্শক দের প্রশংসাধন্য হয়েছেন।বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে হৃদয় দিয়ে ধারণ করেন তিনি ।বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন আগরতলা বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত আবৃত্তির অডিও ভিজ্যুয়াল প্রোডাকশনে ভারত থেকে শিল্পী শাওলী রায় ও বাংলাদেশ থেকে বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী কাজি মাহতাব সুমন অংশ নিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন।আবৃত্তি ও শ্রুতি শিল্পের বিভিন্ন শাখাতে শিল্পীর অনায়াস বিচরণ।শিল্পী রবীন্দ্রনাথ,জীবনানন্দ এর পাশাপাশি কাজী নজরুল ইসলামের দ্রোহের কবিতাগুলি উচ্চারণ করতে বেশী ভালোবাসেন।ছোট বেলা থেকেই সাংস্কৃতিক আবহে বড় হয়েছেন। দাম্পত্য সূত্রেও পেয়েছেন একটি সাংস্কৃতিক পরিবার ।সব মিলিয়ে সাংস্কৃতিক আবহেই চলছে শিল্পীর আবৃত্তি ও শ্রুতি শিল্পের নিত্য অধ্যয়ন।
Published: