JUBO DARPAN DIGITAL, 12-01-2024 :: ১২ জানুয়ারি শুক্রবার সাহিত্য অকাদেমির উদ্যোগে সাহিত্য অকাদেমির পূর্বাঞ্চল কার্যালয়ের ব্যাবস্থাপনায় কলকাতার হোরাসিম লেবেদেভ সরণীতে অবস্থিত রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হল সাহিত্য অকাদেমির যুব পুরস্কার ২০২৩ অর্পণ সমারোহ। অনুষ্ঠানে ২২ জন পুরস্কার বিজেতার হাতে পুরস্কার তুলে দেন সাহিত্য অকাদেমির সভাপতি শ্রী মাধব কৌশিক। পুরস্কারের সাথে থাকে উৎকীর্ণ তাম্রফলক এবং পঞ্চাশ হাজার টাকার একটি চেক। পুরস্কার অর্পণের আগে সাহিত্য অকাদেমি সচিব ড. কে. শ্রীনিবাসরাও মানপত্র পড়ে শোনান। সাহিত্য অকাদেমির উপ-সভাপতি কুমুদ শর্মা তাঁদের হাতে তুলে দেন পুষ্পস্তবক।
পুরস্কৃতরা হলেন জিন্তু ঠাকুরিয়া (অসমীয়া), হামিরুদ্দিন মিদ্যা (বাংলা), মৈনাওশ্রী দাইমারি (বোড়ো), ধীরাজ কুমার রায়না (ডোগরী), অনিরুদ্ধ কানিসেট্টি (ইংরেজী), অতুল কুমার রাই (হিন্দী), মঞ্জুনায়ক চেল্লুরু (কন্নড়), নিগহত নাসরীন (কাশ্মীর), তনভী শ্রীধর কামাত বামবোলকার (কোঙ্কনী), সংস্কৃতি মিশ্র (মৈথিলী), গনেশ পুথুর (মলয়ালম), থিংগমবম পরশুরাম (মণিপুরী), বিশাখা বিশ্বনাথ (মরাঠী), নয়ন কলা দেবী (নেপালী), দিলেশ্বর রাণা (ওডিয়া), সন্দীপ শর্মা (পঞ্জাবী), দেবী লাল মাহিয়া (রাজস্থানী), মধুসূদন মিশ্র (সংস্কৃত), বাপি টুডু (সাঁওতালী), মনিকা পাঞ্জোয়ানি (সিন্ধী), রাম থংগম (তামিল), তাক্কেদশিলা জনি (তেলুগু) এবং তৌসিফ খান (উর্দু)। এঁদের মধ্যে ধীরাজ কুমার রায়না পুরস্কার অর্পণ সমারোহে অনুপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে, দেশের যুবসমাজের অন্যতম প্রেরণাপুরুষ স্বামী বিবেকানন্দ এবং জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের প্রসঙ্গে টেনে সাহিত্য অকাদেমি সচিব ড. কে. শ্রীনিবাসরাও স্বাগত ভাষণে বলেন যে যুবসমাজের যথার্থ বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় লেখালিখির যোগান দেওয়ার দায়িত্ব সমাজের। তাঁদের বিকাশ না হলে সমাজের বিকাশও সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গে তরুণ সাহিত্যিকদের উৎসাহ দেওয়ার স্বার্থে সাহিত্য অকাদেমির নেওয়া পদক্ষেপগুলির কথা তুলে ধরেন তিনি। সভাপতিত্বে ছিলেন সাহিত্য অকাদেমির সভাপতি শ্রী মাধব কৌশিক। তিনি সভাপতির ভাষণে বলেন যে এইসব তরুণ সাহিত্যিকরাই ভারতীয় সাহিত্যের ভবিষ্যৎ। মঞ্চে উপবিষ্ট ২২ ভারতীয় ভাষার সাহিত্যিকদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাকে সম্পূর্ণ ভারতীয় সাহিত্যের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশিষ্ট বাংলা কবি ড. সুবোধ সরকার সর্বভারতীয় এই মঞ্চে উপস্থিত থাকার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি তাঁর ভাষণে বলেন যে প্রত্যেক তরুণ সাহিত্যিকই নিজের লেখা নিয়ে খুঁতখুঁতানির মধ্যে থাকেন। তাঁদের লেখা ঠিক কতটা ভালো হচ্ছে তা নিয়ে দোলাচলে থাকেন তাঁরা। তবে বিদ্রোহী মানসিকতার এইসকল তরুণ-তরুণীর লেখা থেকেই জন্ম নেবে ভবিষ্যতের আশা। একইসাথে সময়ে সময়ে সারা পৃথিবী জুড়ে চলতে থাকা সাহিত্যিকদের ওপরে আক্রমণ নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি। সমাপ্তি ভাষণে সাহিত্য অকাদেমির উপ-সভাপতি অধ্যাপিকা কুমুদ শর্মা বলেন যে এইসকল তরুণ মনের সঠিক বিকাশের জন্যে চাই সঠিক পরিচালনা। তরুণ লেখকদের উচিত তাঁরা যেন তাঁদের অনুপ্রেরণাকে সঠিক পথে চালান। এই প্রসঙ্গে, তিনি বলেন যে সামাজিক মাধ্যমের যে ধরণের বিকাশ ঘটেছে তাতে আজকের দিনে তরুণেরা কম প্রচেষ্টায় প্রচারের আলোকে আসতে সক্ষম হন। তবে তিনি এও বলেন যে কখনও তাড়াহুড়ো করে লেখালিখি করা উচিত নয়। পরিণতমনস্ক লেখার জন্য প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া দরকার। বহু সাহিত্যিক, জ্ঞানীগুণী, বিদ্বজ্জন এবং সাহিত্যপ্রেমী মানুষের উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে গৌরবান্বিত করে তোলে।